ভিডিও

আল জাজিরায় কোকাকোলার বিজ্ঞাপন নিয়ে প্রতিবেদন 

আল জাজিরায় কোকাকোলার বিজ্ঞাপন নিয়ে প্রতিবেদন 

প্রকাশিত: জুন ১৩, ২০২৪, ০২:৪৫ দুপুর
আপডেট: জুন ১৩, ২০২৪, ০৮:২৪ রাত
আমাদেরকে ফলো করুন


গাজায় ইসরায়েলি হামলার প্রতিবাদে বিশ্বব্যাপী বয়কটের মুখে পড়েছে কোমল পানীয় কোকাকোলা। এতে সামিল হয়েছে বাংলাদেশিরাও। এ অবস্থায় যুদ্ধ পরিস্থিতির মধ্যে বয়কট রুখতে ৬০ সেকেন্ডের একটি বিজ্ঞাপন তৈরি করেছে কোকাকোলা। কিন্তু এতে হিতে বিপরীত হয়েছে। বিজ্ঞাপনটি প্রচারিত হয়ার পর থেকেই ঝড়ের গতিতে এর সমালোচনা করা হচ্ছে। 
গত বছরের ৭ অক্টোবর গাজায় ইসরায়েলি হামলা শুরু হলে বিশ্বের অধিকাংশ মুসলিম দেশে ইসরায়েলি সংশ্লিষ্টতা রয়েছে এমন বহু কোম্পানিকে বয়কটের ডাক দেয়। যার মধ্যে রয়েছে কোমল পানীয় উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান কোকাকোলা। 
গাজায় যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে বাংলাদেশে কোকাকোলার বিক্রি ২৩ শতাংশ কমেছে বলে স্থানীয় সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে। এজন্য কোমল পানীয় উৎপাদনকারী এই প্রতিষ্ঠান বিক্রয় বাড়াতে ব্যাপক আকারে বিজ্ঞাপনের দিকে ঝুঁকছে। সংবাদপত্রের পুরো পাতা জুড়ে কিংবা জনপ্রিয় নিউজ ওয়েবসাইটগুলোতে তারা বিজ্ঞাপন প্রচার করছে। 
বিক্রি বাড়ানোর প্রচেষ্টার অংশ হিসেবে গত রোববার টেলিভিশন এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে একটি বিজ্ঞাপন প্রচারণ করা হয়। এর মূল উদ্দেশ্য ছিল কোকাকোলা ইসরায়েলি পণ্য নয়। এতে বলা হয় ১৩৮ বছর ধরে ১৯০ দেশে কোকাকোলা বিক্রি হয়ে আসছে। 
বিজ্ঞাপনটি প্রচারিত হওয়ার পরই অনলাইন এবং অফলাইনে এর তুমুল সমালোচনা করা হয়। বহু বাংলাদেশি বিজ্ঞাপন নিয়ে কঠোর সমালোচনা করে এবং এর স্বচ্ছতা নিয়ে প্রশ্ন তোলে। 
ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী জুমানাহ পারিসা বলেন, বিজ্ঞাপনটি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপক সমালোচনার সৃষ্টি হয়েছে। কিন্তু এতে যদি কোকের বিক্রিতে কোনো সমস্যা না হয়, তাহলে কী হবে আমি জানি না। 
রাজধানীর মিরপুরের ব্যবসায়ী হাসান হাবীব বলেন, গাজায় ইসরায়েলি হামলার পরই কোকাকোলাকে বয়কট চলছে। এখন নতুন করে কোকাকোলার হাস্যরসাত্মক বিজ্ঞাপনটি আমাকেও একে বয়কট করতে উদ্বুদ্ধ করছে। 
এই বিজ্ঞাপনে একজন বলছেন, ফিলিস্তিনেও কোকাকোলার কারখানা রয়েছে। গাজার পশ্চিম তীরের আটারটে কোকাকোলার একটি কারখানা রয়েছে। কিন্তু এটি ইসরায়েলি দখলকৃত এবং আন্তর্জাতিক আইন বিরোধী। 
বাজার গবেষক নাদিয়া তাবাসসুম খান বলেন, গাজায় কোকাকোলার কারখানা রয়েছে বিষয়টি পুরোপুরি মিথ্যা। এর মাধ্যমে লাখ লাখ ফিলিস্তিনিকে অপমান করা হয়েছে। যারা মূলত ইসরায়েলি দখলদার বাহিনীর মাধ্যমে তাদের ভূমি হারাচ্ছে। 
বাংলাদেশের অনলাইন জুতা বিক্রি শপ বয়কটকারীদের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করেছে। তারা অনলাইনে একটি ছবি শেয়ার করেছে যেখানে দেখা যাচ্ছে জুতা পরিহিত এক ব্যক্তি কোকাকোলার বোতলকে লাথি দিয়ে ফেলে দিচ্ছে। 
জিজের মার্কেটিং ম্যানেজার আব্দুল আল নয়ন আল জাজিরাকে বলেন, আমরা কোক বয়কট কারীদের প্রতি সমর্থন জানিয়েছে। এছাড়া ভাইরাল ইস্যুকে কেন্দ্র করে আমরা আমাদের পণ্য মানুষের কাছে পৌঁছানোর চেষ্টা চালিয়েছি। একই সঙ্গে একজন মুসলিম হিসেবে কোকের সঙ্গে ইসরায়েলের কোনো সম্পর্ক নেই এমন ভুয়া তথ্যের প্রতিবাদ জানাচ্ছি। 
বাংলাদেশ নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়েল মার্কেটিং বিভাগের প্রভাষক ওমর সাসিফ আব্দুল্লাহ বলেন, কোকাকোলা কোম্পানি এদেশের মানুষের মনোভাব বুঝতে ব্যর্থ হয়েছে। 
তিনি আরও বলেন, নতুন বিজ্ঞাপনটি ভুল পদ্ধতিতে ভুল বার্তা দেয়া হয়েছে। এটি ক্ষমার অযোগ্য অপরাধ। কোকাকোলার নতুন বিজ্ঞাপন নিয়ে তীব্র সমালোচনার মুখে মঙ্গলবার ইউটিউব এবং ফেসবুক পেইজ থেকে পাঁচ ঘণ্টা পর্যন্ত বিজ্ঞাপনটি বন্ধ রাখা হয়। এরপর বিকেলে দিকে এটি আবার উন্মুক্ত করা হয়। তবে কমেন্ট সেকশনটি বন্ধ রাখা হয়। 



মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, দৈনিক করতোয়া এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়
H009
KCS